ইসলাম ও গুলশানের জঙ্গি হামলা

গুলশানের এই ঘটনায় আমি সত্যি বাকরুদ্ধ। বলার ভাষা নেই। নিহতদের প্রতি রইলো সমবেদনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন জঙ্গিগুলো আল্লাহু আকবর বলে গুলি চালায়। এক এক করে হত্যা করতে থাকে হলি আর্টিজান বেকারি নামের সেই রেস্তোরাঁর গ্রাহকদের।

তবে একটি বিষয় আমাকে বারবার ভাবাচ্ছে, এক দল আল্লাহু আকবর বলে এতগুলো মানুষ হত্যা করছে। আরেক দিকে ফেসবুক তথা সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখি চলছে আল্লাহ্‌ ওদের (জিম্মিদের) রক্ষা করো/হেফাজত করো।

আল্লাহর তো তাহলে দ্বিধায় পড়ে যাওয়ার কথা! কার পক্ষ নিবেন, কাকে সহযোগিতা করবেন? জিম্মিদের নাকি জিম্মিকারী জঙ্গিদের?

শেষ পর্যন্ত মনে হয় জঙ্গিদের পক্ষই নিলেন আল্লাহ্‌। কারন তারা নির্বিঘ্নে তাদের প্ল্যান অনুযায়ী সকল জিম্মিদের হত্যা করতে সফল হয়েছে। তাছাড়া আল্লাহ্‌ কেন শুধু শুধু জিম্মিদের পক্ষ নিবেন? তাদের সবাই তো মুসলমান ও ছিলো না। বিদেশীদের মধ্যে সবাইই তো খ্রিষ্টান বা ইহুদী ছিলো, আর যারা বাংলাদেশী মুসলমানরা ছিলেন, তাদের সবাই কি সহি মুসলিম ছিলেন? হলে তো তাদের পক্ষ আল্লাহ্‌ অবশ্যই নিতেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন বন্দীদের জোর করে কোরান তেলওয়াত করতে বলছিলো জঙ্গিরা। এই কথা শোনার পর থেকেই নিচের এই সুরাটির কথা মনে পড়ে গেলোঃ

“অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও।” (সূরা ৯- আয়াত ৫)

সুতরাং এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, জঙ্গিরা বা হামলাকারীরা ছিলো প্রকৃতপক্ষে মুসলমান। অক্ষরে অক্ষরে তারা তাদের ইসলাম ধর্ম পালন করে। যে ধর্ম কাফেরদের বর্বরতম হত্যাকে জায়েজ করে, যে ধর্ম অমুসলিম/নাস্তিকদের হত্যা করার আদেশ দেয়, সেই ধর্মের ধর্মাবলম্বীদের কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়?

তাছাড়া ঘাড়ের উপর আঘাত করলে ও জবাই করলে এবং অমুসলিম হত্যা করলে যে সওয়াব বেশি সে ব্যাপারে কিন্তু কোরানে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। বিশ্বাস হচ্ছে না আমার কথা? আসুন দেখি কোরানে কি লিখা আছে?

“তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। (সূরা ৪- আয়াত ৮৯)

“… আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাটো জোড়ায় জোড়ায়।” (সূরা ৮- আয়াত ১২)

“হে ঈমানদারগণ, তোমাদের নিকটবর্তী কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাও এবং তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা অনুভব করুক্ আর জেনে রাখ, আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা ৯- আয়াত ১২৩)

“অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দানে মারো, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ্ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।” (সূরা ৪৭- আয়াত ৪)

একজন মানুষ নিজেকে মুসলমান দাবী করতে হলে তাঁকে অবশ্যই কোরান ও তাদের মহানবী মোহাম্মদ-এর সকল নির্দেশ মানতে হবে, অস্বীকার করতে পারবে না। অস্বীকার করলে সে মুসলমান হতে পারবে না।

এবং আমার মনে হয় ঠিক এই কারনেই আমাদের এই  ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান প্রকাশ্যে বলে থাকেন, লেখালেখি কিংবা ইসলামের নামে কিছু বলে যদি কেউ খুন হয় তাহলে তার দায়ভার সরকার নিবেনা। কাউকে গ্রেফতারও করে না,  কোন বিচার ও হয়না। স্বাভাবিকভাবে ভাবলেই এই ধরনের বক্তব্যের মুল কারন বুঝতে পারা যায়। করবেই বা কেনো? এই ধরনের হত্যাকান্ড গুলো তো তাদের মুসলমান ভাইরাই করেছে। মুসলমান ভাইদের কি নিজ হাতে শায়েস্তা করা যায়? যায় না। শায়েস্তা তো করতে হবে কাফেরদের, নাস্তিক/অবিশ্বাসীদের।

একসময় আমিও বলতাম, সকল মুসলমান খারাপ না। সবাই জঙ্গি না, সবাই জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। কেননা তাদের মুসলমান ভাইগুলো যখন এসকল হত্যাকান্ড চালায় তখন তারা তাদের মুখে কুলুপ এটে থাকে। কিছু বললে বলবে ওরা অপরাধী, ওরা মুসলিম না, কোরান অবলম্বন করলে এমন করতো না। কিন্তু একটি বারও প্রতিবাদ করে না এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। একটি বারও বলে না তাদের নিজেদের কোরানে লেখা সত্যিকার কথা গুলো। বলে না কোরান নির্দেশ দিয়েছে অন্য ধর্মের মানুষদের হত্যা করার কথা। অন্যকেউ বললেও তারা নিজেদের মুসলিম আইডেন্টিটি বাঁচাতেই ব্যস্ত হয়ে যায়।

সব শেষে শুধু এইটুকুই বলবো, ধর্মীয় রীতিনীতির ঊর্ধে গিয়ে মানবতার চিন্তাশক্তি দিয়ে ভাবার সময় চলে এসেছে। এভাবে আর কতো? আর কতো মানুষ হত্যা করবেন আপনারা? পারবেন শুধু আমাদের মতো নিরীহ মানুষদের ওপর চাপাতি চালাতে।

11 comments

  1. তোমাদের মত মানুষের জন্যই ইসলাম-এর নামে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। এইসব বন্ধ কর। ইসলাম নিয়ে কেন এত সমস্যা?

    Like

  2. tui ekta kafir. toder ke niscoy redia taka dey ei sob tottho choranor jonno. jah tui rendia niya kotha bol, sala malauner bacca.

    Like

  3. malaunere baccha. tor ero boro sahos? amader pobitro koramer ayat niye kotha tulosh? tor napak mukhe konraner awat uccarore sahos paili koi thike? England er yarmouth e thakosh to? Shuorer baccha, oikhani aisha allahr name jobai kore halal kore dibo. jahannamer jojokhe purbi. ready thak. Islam ke niye,. koram ke niye faizlamir moja bujhbi jib kaita hate dhorai dia jobai kormu. Dhakar gulashaner amader attottegi shohid bhaider ke niye ektao napak kotha bolbi na. ora islamer name Shohid hoyechen. Praner bhaira amar jongi non. tader name shommaner shathe nibi malauner baccha. Allah Hu Akbar.

    Like

  4. তুই একটা মালাউন হয়ে ইসলাম নিয়ে লিখতে যাস কেন? তোর এতো বড়ো সাহস হয় কেমনে? একটা কাফেরকেও ছাড় দেওয়া হবেনা। এখনও সময় আছে। আল্লাহর পথে চল। আর টা নাহলে চাপাতির কোপ থেকে কেউ বাঁচাতে পারবেনা।

    Like

  5. kuttar baccha. tor mukhe islamer kotha manay na. tui ekta shuworer baccha, tor jonno amar kokhonoi maya doya hoy nai. mone rakhish, capatir tole kintu toder ei porte hobe. gadha kothakar. esob na likhhe akash-batash kinba prem uponnash likh, kaje dibe. beyadop kothakar. khobish tui. morbi tui soon, khub soon.

    Like

  6. tor ki matha kharap hoise? ar kono kaj nai toder eisob balsal chara? tora paisos ki? islam re niye ja iccha bolbi ar amra chup kore bose thakbo? beyadop kothakar. malaoon ra sob somoy malaoon ei thakbe, eta abar promanito holo. ejonnoi toder ke dhore dhore toder moto kafer der martese. tore o marbe kuttar baccha

    Like

Leave a reply to pabel Cancel reply